Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

BWDB Identified Rivers

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "বাপাউবো" বাংলাদেশের নদীগুলোকে সংখ্যাবদ্ধ করেছে এবং প্রতিটি নদীর একটি পরিচিতি নম্বর দিয়েছে। এর ফলে বাপাউবো’র হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা এখন ৪০৫ টি। বাপাউবো সমগ্র বাংলাদেশকে ৬ টি অঞ্চলে বিভক্ত করে নদীসমূহের পরিচিতি নম্বর প্রদান করে। নিম্নে বিভিন্ন অঞ্চলের নদীর সংখ্যা এবং কিছু উল্লেখযোগ্য নদীর বর্ণনা প্রদান করা হল;

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১০২টি),

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১১৫টি),

 উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী (৮৭টি),

উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী (৬১টি),

পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী (১৬টি) এবং

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী (২৪টি) 

 

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীসমূহ: (১০২টি)

আঠারবাঁকি নদী, আড়িয়াল খাঁ নদ, আতাই নদী, আন্ধারমানিক নদী, আফ্রা নদী, অর্পণগাছিয়া নদী, ইছামতি-কালিন্দি, কচা নদী, কপোতাক্ষ নদ, কুমার নদ (চুয়াডাঙ্গা), কুমার নদী (ফরিদপুর-গোপালগঞ্জ), কুমার আপার নদী, কুমার লোয়ার নদী, কয়রা নদী, করুলিয়া নদী, কাকশিয়ালী নদী, কাজীবাছা নদী, কাটাখালী নদী, কাটাখাল নদী, কালীগঙ্গা নদী (পিরোজপুর), কীর্তনখোলা নদী, খায়রাবাদ নদী, খোলপেটুয়া নদী, গড়াই নদী, গুনাখালি নদী, গলঘেসিয়া নদী, গুলিশাখালী নদী, ঘাঘর নদী, ঘাসিয়াখালী নদী, চত্রা নদী, চুনকুড়ি নদী, চন্দনা-বারাশিয়া নদী, চাটখালী নদী, চিত্রা নদী, ঝপঝপিয়া নদী, টর্কি নদী, টিয়াখালি নদী, ঢাকি নদী, তেঁতুলিয়া নদী, তেলিগঙ্গা-ঘেংরাইল নদী, দড়াটানা-পয়লাহারা নদী, দাড়ির গাঙ নদী, দেলুতি নদী, নুন্দা-উত্রা নদী, নবগঙ্গা নদী, নড়িয়া নদী, নেহালগঞ্জ-রঙমাটিয়া নদী, পটুয়াখালী নদী, পুটিমারি নদী, পুরাতন পশুর নদী, পশুর নদী, পাণ্ডব নদী, পানগুছি নদী, পালং নদী, ফটকি নদী, বগী নদী, বুড়িশ্বর-পায়রা নদী, বলেশ্বর নদী, বাদুড়গাছা নদী, বিশখালী নদী, বিশারকন্দা-বাগদা নদী, বিষ্ণু-কুমারখালি নদী, বেগবতী নদী, বেতনা নদী, বেলুয়া নদী, ভদ্রা নদী, ভুবনেশ্বর নদী, ভৈরব নদ, ভৈরব নদী (বাগেরহাট), ভৈরব-কপোতাক্ষ নদ, ভোলা নদী, মংলা নদী, মুক্তেশ্বরী টেকা নদী, মধুমতি নদী, মরিচ্চাপ-লবঙ্গবতী নদী, মাথাভাঙ্গা নদী, মাদারগাঙ নদী, মাদারীপুর বিলরুট নদী, মালঞ্চ নদী, মিনহাজ নদী, রূপসা নদী, রাবনাবাদ নদী, রায়মঙ্গল নদী, লোহালিয়া নদী, শাকবাড়িয়া নদী, শাতলা-হারতা-নাথারকান্দা নদী, শালদহ নদী, শিবসা নদী, শোলমারি নদী, সুগন্ধা নদী, সন্ধ্যা নদী, সয়া-হাড়িভাঙ্গা নদী, সাপমারা-হাবড়া নদী, সালতা নদী, সিরাজপুর হাওর নদী, হরি নদী, হরিহর নদী, হামকুড়া নদী, হাড়িয়া নদী, হাপরখালী নদী, হাবরখালী নদী এবং হিশনা-ঝাঞ্চা নদী।

 

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদীসমূহ:  (১১৫টি)

আখিরা-মাচ্চা নদী, আত্রাই নদী, আত্রাই বা কাঁকড়া নদী (দিনাজপুর), আত্রাই বা গুড় নদী (নওগাঁ-নাটোর), আত্রাই নদী (পাবনা), আলাই নদী, আলাইকুমারী নদী, ইছামতি নদী (দিনাজপুর), ইছামতি নদী (পাবনা), ইছামতি নদী (বগুড়া), ইছামতি নদী (বগুড়া-সিরাজগঞ্জ), ইরামতি নদী, করতোয়া নদী, করতোয়া নদী (নীলফামারী), কাগেশ্বরী নদী, কাটাখালী নদী (গাইবান্ধা), কালা নদী, কালাপানি নদী, কালুদাহা নদী, কুমলাল-নাউতারা নদী, কুরুম নদী, কুলিক নদী, খড়খড়িয়া-তিলাই নদী, খালসিডিঙ্গি নদী, গদাই নদী, গভেশ্বরী নদী, পদ্মা নদী, গাংনাই নদী, গিদারী নদী, গিরাই নদী, গুকসী নদী, গোবরা নদী, গোহালা নদী, ঘড়িয়া খাল নদী, ঘাঘট নদী, ঘিরনাই নদী, ঘোড়ামারা নদী, চাওয়াই নদী, চিকনাই নদী, চিকলী নদী, চিরি নদী, চিড়ি নদী, চুঙ্গাভাঙ্গা নদী, ছাতনাই নদী, ছোট ঢেপা নদী, ছোট যমুনা নদী, ছোট সেনুয়া নদী, টাঙ্গন নদী, ডাহুক নদী, ঢেপা নদী, তালমা নদী, তিস্তা নদী, তিস্তা নদী (পঞ্চগড়), তীরনই নদী, তীরনই নদী (পঞ্চগড়), তুলসীগঙ্গা নদী, দুধকুমার নদী, দেওনাই-চাড়ালকাটা-যমুনেশ্বরী নদী, ধরলা নদী, ধাইজান নদী, ধুম নদী, নর্ত নদী, নলশীসা নদী, নলেয়া নদী, নাগর আপার নদী, নাগর লোয়ার নদী, নারোদ নদী, পলিমারি নদী, পাগলা নদী, পাথরঘাটা নদী, পাথরাজ নদী, পুনর্ভবা নদী, পেটকী নদী, ফকিরনী নদী, ফুলকুমার নদী, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, বড়াল আপার নদী, বড়াল লোয়ার নদী, বাঙালি নদী, বাদাই নদী, বার্নাই নদী, বান্নী নদী, বুরাইল নদী, বুল্লাই নদী, বুড়িখোড়া নদী, বুড়ি তিস্তা নদী, বেরং নদী, বেলান নদী, বেসানী নদী, বোরকা নদী, ভাদাই নদী, ভুল্লী নদী, ভেরসা নদী, মহানন্দা আপার নদী, মহানন্দা লোয়ার নদী, মাইলা নদী, মালদাহা নদী, মুসাখান নদী, মানস নদী, যমুনা নদী (পঞ্চগড়), রতনাই নদী, রামচণ্ডি নদী, রাক্ষসিনী-তেঁতুলিয়া নদী, লেংগা নদী, লোনা নদী, শিব নদী, সতী-স্বর্ণামতি-ভাটেশ্বরী নদী, সিমলাজান নদী, সিরামাখালী খাল নদী, সিংগিমারী নদী, সুই নদী, সেনুয়া নদী, শুক নদী, হারাবতী নদী এবং হুড়াসাগর নদী

 

 

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহ: (৮৭টি)

আত্রাখালি নদী, আবুয়া নদী বা নান্দিয়া গাং, আমরি খাল নদী, ইসদার খাল-বারভাঙ্গা নদী, উপদাখালী নদী, উমিয়াম নদী, কর্ণঝরা নদী, কর্ণ-বালজা নদী, করিস নদী, কাঁচামাটিয়া নদী, কাপনা নদী, কামারখাল নদী, কামারখালী নদী, কালদাহার-কানিয়াকুল নদী, কালনী নদী, কালাপানিঝরা নদী, কুশিয়ারা নদী, কোরাঙ্গী নদী, খাজাচিং নদী, খাসিমারা নদী, খেপা নদী, খোয়াই নদী, গুমাই নদী, ঘাগটিয়া নদী, ঘানুরা-বগালা নদী, ঘোড়াউত্রা নদী, চামতি নদী, চিতলখালী নদী, চেলা নদী, জাফলং-ডাউকি নদী, জালিয়া ছড়া নদী, জালুখালি নদী, জুরী নদী, ডাউকা নদী, ধলা নদী, দুধদা নদী, দোলতা নদী, ধনু নদী, ধলাই-বিসনাই নদী, ধলাই নদী, নকলা-সুন্দ্রাকাশি নদী, নরসুন্দা নদী, নলজুর নদী, নয়াগাং নদী, নয়া গাং নদী, নিতাই নদী, পাটনাই-পাইকারতলা নদী. পাবিজুড়ি-কুশি গাঙ-কুশিয়া নদী, পিয়াইন নদী, পিয়াইন নদী (সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা), পুরনো সুরমা নদী, পোড়া খাল-খাইয়া নদী, বটরখাল নদী, বড় গাং নদী, বাউলাই নদী, বাথাইল নদী, বালই নদী, বিজনা-গুঙ্গাইজুরি নদী, বিবিয়ানা নদী, বেকরা নদী, বেতৈর নদী, বেদুরি নদী, ভাবনা-বাঁশিয়া-বহিয়া নদী, ভোগাই-কংস নদী, মগড়া নদী, মনু নদী, মরা সুরমা নদী, মহারশি নদী, মহাসিং নদী, মালিজি নদী, মিরগী নদী, জাদুকাটা-রক্তি নদী, লংলা নদী, লাইন নদী, লাউরানজানি নদী, লুভা নদী, সাইদুলি-বারনি নদী, সাতারখালী নদী, সারি গোয়াইন নদী, সিনাই নদী, সিঙ্গুয়া নদী, সুতাং নদী, সুরমা নদী, সোনাই-বরদাল নদী, সোমেশ্বরী নদী, সোমেশ্বরী নদী (ধর্মপাশা) এবং সোমেশ্বরী নদী (শ্রীবর্দী-ঝিনাইগাতি)

 

উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদীসমূহ: (৬১টি)

আইমান-আখিলা নদী, আইমান-মোবারি নদী, আড়িয়াল খাঁ নদী, ইছামতি নদী (মানিকগঞ্জ), ইছামতি নদী (সিরাজদিখান), ইলিশমারী নদী, এলংজানী নদী, কাটাখালি নদী, কালিগঙ্গা নদী (মানিকগঞ্জ), খিরো নদী (ত্রিশাল), খিরো নদী (ভালুকা), গাংডুবি নদী, গাজীখালী নদী, গোল্লার নদী, চাতাল নদী, চাপাই নদী, চিলাই নদী, জয়পাড়া খাল নদী, ঝারকাটা নদী, জিঞ্জিরাম নদী, ঝিনাই নদী, টঙ্গী নদী, টংকি নদী, তালতলা নদী, তুরাগ নদী, তুলসীখালী নদী, ধলেশ্বরী নদী, নাগদা নদী, নাঙ্গলা নদী, নালজুরি নদী, নাংলী নদী, পদ্মা নদী, পাগারিয়া-শিলা নদী, পারুলি খাল নদী, পাহাড়িয়া নদী, পুরনো ধলেশ্বরী নদী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, পুংলী নদী, বংশী নদী, বংশী নদী (সাভার), ব্রহ্মপুত্র নদী (নরসিংদী-মুন্সীগঞ্জ), বাকসাতরা নদী, বাজ্জা-মেধুয়া নদী, বানার আপার নদী, বানার লোয়ার নদী, বালু নদী, বুড়িগঙ্গা নদী, বৈরান নদী, বোশখালীর নদী, মরা জিঞ্জিরাম নদী, মাহারি নদী, মিনিখালী নদী, লাবুন্ধা নদী, লৌহজং নদী, শীতলক্ষ্যা নদী, সালদা নদী, সুতী নদী, সুতিয়া নদী, সোনাখালী নদী, হাই নদী এবং হাড়িদোয়া নদী

 

পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদীসমূহ: (১৬টি)

ইছামতি নদী (রাঙ্গামাটি), ঈদগাও নদী, কর্ণফুলি নদী, কাসালং নদী, চেঙ্গি নদী, ডলু-টংকাবতী নদী, নাফ নদী, বুড়া মাতামুহুরী নদী, বাঁকখালি নদী, ভারুয়াখালি নদী, ভোলাখাল নদী, মাইনী নদী, মাতামুহুরী নদী, রাংখাইন নদী, সাঙ্গু নদী এবং হালদা নদী।

 

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহ: (২৪টি)

আর্সি-নালিয়া নদী, কাকড়ি নদী, কাস্তি নদী, গোমতী নদী, ঘুংঘুর নদী, ছোট ফেনী নদী, ডাকাতিয়া নদী, ডাসাডিয়া নদী, তিতাস নদী, পুরনো তিতাস নদী, ধনাগোদা নদী, ফেনী নদী, বিজলি নদী, বুড়ি নদী, ভুলুয়া নদী, মুহুরী নদী, মেঘনা আপার নদী, মেঘনা লোয়ার নদী, লহর নদী, লংগন বলভদ্রা নদী, সালদা নদী, সেলোনিয়া নদী, সোনাই নদী, মুহুরী নদী এবং হাওড়া নদী।

 

উল্লেখযোগ্য নদীসমূহের বর্ণনা:

পদ্মা নদী

(পানি বিজ্ঞান অনুসারে, নদীর উৎপত্তিস্থল থেকে পতিতস্থল পর্যন্ত একটিই নাম হবে। সেই অনুযায়ী “পদ্মা” কোনো নদীর নাম নয়। পদ্মা নামটি আসলে সাহিত্য এবং পত্রিকাতে ব্যবহার করার জন্য সৃস্টি করা হয়েছে। উৎপত্তিস্থল অনুযায়ী নদীটির আসল নাম হল গঙ্গা বা Ganges)

পদ্মা বাংলাদেশের প্রধান নদী। হিমালয়ে উৎপন্ন গঙ্গানদীর প্রধান শাখা এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী এই পদ্মার উত্তর তীরে অবস্থিত। পদ্মার সর্বোচ্চ গভীরতা ১,৫৭১ ফুট (৪৭৯ মিটার) এবং গড় গভীরতা ৯৬৮ফুট (২৯৫ মিটার)। নদীটির দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১০ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক পদ্মা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ৩২। রাজা রাজবল্লভের কীর্তি পদ্মার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ধ্বংস হয় বলে পদ্মার আরেক নাম কীর্তিনাশা। হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন গঙ্গা নদী রাজশাহী জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, এখান থেকে নদীটি পদ্মা নাম ধারণ করেছে। গঙ্গার অন্য শাখাটি ভাগীরথী নামে ভারতে হুগলীর দিকে প্রবাহিত হয়। উৎপত্তিস্থল হতে ২২০০ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দে যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়ে মিলিত প্রবাহ পদ্মা নামে আরো পূর্ব দিকে চাঁদপুর জেলায় মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। সবশেষে পদ্মা-মেঘনার মিলিত প্রবাহ মেঘনা নাম ধারণ করে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের সাথে মিলিত হয়। পদ্মার প্রধান উপনদী মহানন্দা এবং পুনর্ভবা । পদ্মার বিভিন্ন প্রশাখা নদীসমূহ হলো- মধুমতী, পশুর, কপোতাক্ষ ইত্যাদি।

 

আন্ধারমানিক নদী 

আন্ধারমানিক নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলা ও বরগুনা জেলায় অবস্থিত অন্যতম নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫০০ মিটার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক আন্ধারমানিক নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৪। এটা গঙ্গা-পদ্মা সিস্টেমে অবস্থিত অন্যতম বৃহৎ উপকূলীয় নদী। আন্ধারমানিক নদীটি এখন নাব্যতা সমস্যায় ভুগছে। কলাপাড়ার অধিবাসিগণ নদীটির মরুময়তা নিয়ে বেশ সোচ্চার। পলি পড়ে এবং নতুন চর জেগে ৪০ কিলোমিটার নদীটির প্রায় ২৫ কিলোমিটার স্থায়ীভাবে শুকিয়ে গেছে।

 

কপোতাক্ষ নদ 

কপোতাক্ষ নদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোর জেলা সাতক্ষীরা জেলা ও খুলনা জেলার একটি নদ। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক কপোতাক্ষ নদের প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৯। এই নদ এর উৎপত্তি যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলায় ভৈরব নদী থেকে এবং এটি পরে খুলনা জেলার কয়রায় খোলপটুয়া নদীতে গিয়ে পতিত হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ১৮০ কিলোমিটার (১১০ মাইল), গড় প্রস্থ ১৫০ মিটার (৪৯০ ফুট), গভীরতা ৩.৫ থেকে ৫ মিটার (১১.৫ থেকে ১৬.৪ ফুট)। এই নদ ৮০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত।

 

কীর্তনখোলা নদী 

কীর্তনখোলা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বরিশাল এবং ঝালকাঠি জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৬০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৪৯৭ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক কীর্তনখোলা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ২১।এই নদীর তীরে বরিশাল শহর অবস্থিত। কীর্তনখোলা নদীর শুরু হয়েছে বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদ হতে। গজালিয়ার কাছে গিয়ে এটি পতিত হয়েছে গাবখান খালে। কীর্তনখোলা মূলত আড়িয়াল খাঁ নদের একটি শাখা। আড়িয়াল খাঁর উৎপত্তি পদ্মা থেকে। বরিশাল ঘেঁষে কীর্তনখোলা নদী পশ্চিমে এগিয়ে নলছিটি থানার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। সেই সঙ্গে পরিচিতি পেয়েছে নাম। একটি অংশ ধানসিড়ি নাম নিয়ে কচা নদীতে গিয়ে মিশেছে। অপর অংশ মিলেছে বিষখালী নদীতে।শায়েস্তাবাদ হতে নলছিটি অবধি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২১ কিলোমিটার। এ জায়গায় নদীটির প্রস্থ প্রায় আধা কিলোমিটার। ব্রিটিশ আমলে এটি আরো বেশি প্রমত্তা ছিলো, সেসময়ে এর প্রস্থ ছিলো ১ কিলোমিটারের মতো। গত ১ শতাব্দী ধরে চর পড়ে কীর্তনখোলার প্রস্থ কমে গেছে। এর পাশাপাশি পলি পড়ে নদীটির নাব্যতাও হ্রাস পেয়েছে।

কীর্তনখোলা নদীর তীরে বরিশাল নৌ বন্দর অবস্থিত, যা বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম নদী-বন্দর।

 

গড়াই নদী 

গড়াই নদী গঙ্গা তথা পদ্মার একটি প্রধান শাখানদী হিসেবে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মধুমতি নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ২৪। গড়াই নদীটি কুষ্টিয়া জেলার হাটশহরিপুর ইউনিয়নে প্রবহমান পদ্মা নদী হতে উৎপত্তি লাভ করে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে মধুমতি নদীতে পতিত হয়েছে।[১] একসময় গড়াই নদী দিয়ে গঙ্গার প্রধান ধারা প্রবাহিত হতো, যদিও হুগলি-ভাগীরথী ছিল গঙ্গার আদি ধারা। কুষ্টিয়া জেলার উত্তরে হার্ডিঞ্জ সেতুর ১৯ কিলোমিটার ভাটিতে তালবাড়িয়া নামক স্থানে গড়াই নদী পদ্মা থেকে উৎপন্ন হয়েছে। নদীটি কুষ্টিয়া জেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গণেশপুর নামক স্থানে ঝিনাইদহ জেলায় প্রবেশ করেছে। অতঃপর ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়ে চাদর নামক গ্রাম দিয়ে রাজবাড়ী জেলায় প্রবেশ করেছে। এরপর ঝিনাইদহ-রাজবাড়ী জেলা, মাগুরা জেলা-রাজবাড়ী জেলা এবং মাগুরা জেলা-ফরিদপুর জেলার সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়ে মধুমতি নদী নামে নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

 

চিত্রা নদী 

চিত্রা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গোপালগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৭২ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫৩ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক চাটখালী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৩৪। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে প্রবাহিত গঙ্গা-পদ্মা সিস্টেমের একটি বিশাল উপকূলীয় নদী। ১৭০ কিঃমিঃ দীর্ঘ এ নদীটি চুয়াডাঙা ও দর্শনার নিম্নস্থল থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কালিগঞ্জ, মাগুরার শালিখা ও কালিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গাজীরহাটে নবগঙ্গা নদীর সাথে মিলেছে এবং এর মিলিত স্রোত খুলনার দৌলতপুরের কাছে ভৈরব নদীতে মিশেছে।

 

পশুর নদী 

পশুর নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও বাগেরহাট জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪২ কিলোমিটার, প্রস্থ ২৬০ থেকে ২.৫ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক পশুর নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৫১। এটি গঙ্গা জলপ্রবাহের একটি ধারা। এটি খুলনা জেলা এবং বাগেরহাট জেলার মাঝে অবস্থিত। এটি মূলত জোয়ার ভাটার পানি বহন করে। এটি সুন্দরবন এর কাছে শিবসা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এটি বঙ্গোপসাগরের কাছে কুঙ্গা নদী নামে পরিচিত। এটি বাংলাদেশে গভীরতম নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। পশুর নদীটি খুলনা জেলার খুলনা সদর উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নে প্রবহমান কাজিবাছা নদী হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা একই জেলার এবং দাকোপ উপজেলার খুলনা রেঞ্জ ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে নিপতিত হয়েছে।

 

ভোলা নদী 

ভোলা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৫৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২৭৫ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ভোলা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৭১। ভোলা নদীটি বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলার চাঁদপাই রেঞ্জ ইউনিয়ন এলাকায় প্রবহমান খারমা নদী হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার শরণখোলা রেঞ্জ ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে বলেশ্বর নদীতে নিপতিত হয়েছে।

 

মোংলা নদী 

মোংলা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা ও বাগেরহাট জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২৪৫ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মোংলা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৭২। মোংলা নদীটি বাগেরহাট জেলার পশ্চিম দিকের অনেকগুলো খাল বিশেষত কুমারখালি নদী, ফয়লা নদীর জলধারা রামপাল উপজেলার কাছে একত্রিত হয়ে মোংলা নাম ধারণ করেছে।অতপর নদীটি আরো দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বন্দরনগরী মোংলার পাশে পশুর নদীতে নিপতিত হয়েছে।

 

রূপসা নদী

রূপসা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৪৮৬ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক রূপসা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৮১। নদীটি পদ্মার একটি শাখা নদী। এটি ভৈরব নদ থেকে উৎপত্তি হয়েছে এবং পরবর্তিতে পশুর নামে প্রবাহিত হয়েছে।রূপসা নদীটি খুলনা শহরের জেলখানা ঘাট এলাকায় প্রবহমান ভৈরব নদ হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা একই উপজেলার জলমা ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে কাজিবাছা নদীতে নিপতিত হয়েছে। কথিত আছে যে, ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নড়াইল জেলার ধোন্দা গ্রামের রূপচাঁদ সাহা নামক জনৈক লবণ ব্যবসায়ী নৌকায় যাতায়াতের জন্য ভৈরব নদের সঙ্গে কাজীবাছা নদীর সংযোগ করার জন্য একটি খাল খনন করেছিলেন। রূপচাঁদ সাহার নাম অনুসারে ঐ খালের নাম হয়েছিল রূপসা।

 

ভৈরব নদ 

ভৈরব নদ বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলা, চুয়াডাঙ্গা জেলা, ঝিনাইদহ জেলা, যশোর জেলা, নড়াইল জেলা, খুলনা জেলা, কুষ্টিয়া জেলা, ও মাগুরা জেলা অবস্থিত অন্যতম নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৪২ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৬০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ভৈরব নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৬৮। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশের একটি নদ। ভৈরব নদের তীরে খুলনা ও যশোর শহর অবস্থিত। এছাড়া এর তীরে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে মুজিবনগর, মেহেরপুর, গাড়াবাড়ীয়া, চুয়াডাঙা, বড়বাজার, কোটচাঁদপুর, চৌগাছা, দৌলতপুর, ও বাগেরহাট। হিন্দুদের কাছে নদটি পবিত্র হিসাবে সমাদৃত। নদটির নাম "ভৈরব" এর অর্থ "ভয়াবহ", এক সময় গঙ্গা/পদ্মা নদীর মূল প্রবাহ এই নদকে প্রমত্তা রূপ দিয়েছিলো, সেই থেকেই নামটির উৎপত্তি। নদটির দুইটি শাখা রয়েছে ইছামতি নদী এবং কপোতাক্ষ নদী। ভৈরব নদটি তার যাত্রাপথের একেক স্থানে একেক নাম নিয়েছে। কালীগঞ্জ হতে কৈখালি পর্যন্ত নদীটির নাম 'কালিন্দি'। এর পর এটি 'রায়মঙ্গল' নামে পরিচিত। তার পর নদীটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। পশ্চিমের অংশটি 'হরিভাঙা', এবং পূর্বেরটি 'ভৈরব' নামে প্রবাহিত হয়। কৈখালির পরে নদটি 'খুলনা-ইছামতি' নামে প্রবাহিত হয়। দক্ষিণের অংশটি 'রায়মঙ্গল-হরিভাঙা' নামে পরিচিত। ভৈরব নদের মোট দৈর্ঘ্য ২৫০ কিলোমিটার।

 

ইছামতি নদী 

ইছামতি নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পাবনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৪৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১২০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ইছামতি নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ০৯। ইছামতি নদীটি পাবনা জেলার পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নে প্রবহমান পদ্মা নদী হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা একই জেলার বেড়া উপজেলার পৌরসভা এলাকা পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে হুরাসাগর নদীতে নিপতিত হয়েছে। আত্রাই নদী (পাবনা) হচ্ছে এর একমাত্র শাখানদী।

 

চিকনাই নদী 

চিকনাই নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নাটোর এবং পাবনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫১ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক চিকনাই নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৩৯।

 

বাঙালি নদী 

বাঙালি নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গাইবান্ধা, বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৮৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৪৩ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক পাথরাজ নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী নং ৭৯। ২০০৭ সালে নদীটি বিশেষভাবে আলোচনায় আসে যমুনা নদীর সঙ্গে নদীটির মিশে যাবার আশঙ্কায়। এর ফলে এলাকার ব্যাপক ভৌগোলিক পরিবর্তন হতে পারে। বাঙালি নদীর উৎপত্তি নীলফামারী জেলার তিস্তা নদী থেকে। উৎস থেকে নদীটি ঘাঘট নামে গাইবান্ধায় প্রবাহিত হয়। গাইবান্ধায় এসে এটি দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে যায়- একটি শাখা পশ্চিমে ঘাঘট নামে প্রবাহিত হয়ে শেরপুরে করতোয়া নদীতে গিয়ে পড়ে; অপর শাখা বাঙালি নামে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে গিয়ে বগুড়ায় আবারো দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। এই শাখা দুটি যথাক্রমে যমুনা ও করতোয়ায় গিয়ে পড়ে। বাঙালি নদীর অনেক শাখা নদী আছে যথা: বেলাল, মানস, মধুখালি, ইছামতি, ভলকা এবং অন্যান্য।

 

হুরাসাগর নদী 

হুরাসাগর নদী বাংলাদেশের উত্তরাংশের সিরাজগঞ্জ জেলা, পাবনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৬৬ কিলোমিটার, প্রস্থ ৬০ মিটার এবং গভীরতা ৭ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন ৩০০ বর্গকিলোমিটার। বগুড়া নগরবাড়ি পাকা সড়ক থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে হুরাসাগর নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত ।

 

আড়িয়াল খাঁ নদী 

আড়িয়াল খাঁ নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৭৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক আড়িয়াল খাঁ নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ০৩।

 

কাসালং নদী 

কাসালং নদী বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের রাঙামাটি জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১২৫ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৮০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক কাসালং নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ০৪। ভারতের মিজোরাম রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় পর্বতশ্রেণি থেকে উৎসারিত হয়ে কয়েকটি ক্ষুদ্র স্রোতধারা রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি এলাকায় একত্রে মিলিত হয়ে কাসালং নদীর সৃষ্টি করেছে। উত্তর-দক্ষিণ বরাবর প্রবাহিত নদটি রাঙ্গামাটি থেকে প্রায় ২০ কিমি উত্তরে কেদারমারাতে এসে কর্ণফুলী নদীতে (কাপ্তাই হ্রদ) পড়েছে। নদীটি ৬৫ কিমি দীর্ঘ এবং সারা বছরই খরস্রোতা।

 

মাতামুহুরী নদী 

মাতামুহুরী নদী বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মাতামুহুরী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৩। মাতামুহুরীর সঠিক উৎপত্তিস্থল কোনটি তা বিতর্কিত। কারো মতে লামার মাইভার পর্বতে মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি৷ মগ ভাষায় এই নদীটির নাম মামুরি। মাতামুহুরী নদীর নামকরণেরও একটি ইতিহাস আছে। জনশ্রুতি আছে এই নদী নাকি কোন একটি (একক উৎস নির্দিষ্ট ঝরণা) হতে সৃষ্টি নয়। এতি মাতৃস্তন সদৃশ বিভিন্ন পর্বত গাত্র হতে জল চুয়ে চুয়ে পড়েই নদীর সৃষ্টি। তাই এর নাম মাতামুহুরী। মুহুরী শব্দের অর্থ অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে জলপড়া ঝাজর অর্থাৎ ইংরেজিতে বলে শাওয়ার (Shower)। এই নদীটি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম পাশ ঘেষে বঙ্গোপসাগর-এ পতিত হয়েছে৷ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৭ কি.মি.৷

 

সাঙ্গু নদী 

সাঙ্গু নদী বা শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯৪ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১১৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক সাঙ্গু নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৫। ১৮৬০ সালে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গেজেটিয়ার প্রকাশকালে ব্রিটিশ শাসকরা ইংরেজিতে এটিকে সাঙ্গু নাম দেন তবে মারমা সম্প্রদায়ের ভাষায় শঙ্খকে রিগ্রাই থিয়াং অর্থাৎ স্বচ্ছ পানির নদ বলা হয়। বান্দরবানের শঙ্খ-তীরবর্তী লােকজনের ৯০ শতাংশই মারমা। নদীটি দেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনােয়ারা ও বাঁশখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।  উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার। বান্দরবান জেলা শহরও এ নদীর তীরে অবস্থিত।

 

হালদা নদী 

হালদা নদী বাংলাদেশের পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১০৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৩৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক হালদা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী নং ১৬। নদীটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বাটনাতলী পাহাড় হতে উৎপন্ন হয়ে এটি ফটিকছড়ির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবেশ করেছে।  এটি কালুরঘাটের নিকটে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৮১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ২৯ কিলোমিটার অংশ সারা বছর বড় নৌকা চলাচলের উপযোগী থাকে। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখানে রুই জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে এবং নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। হালদার সাথে বাংলাদেশ এর অন্যান্য নদী যেমন পদ্মা নদী,মেঘনা নদী,যমুনা নদীর সংযোগ না থাকাতে রুই জাতীয় মাছের "জীনগত মজুদ" সম্পূর্ণ অবিকৃত রয়েছে। হালদা নদী কেবলমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ঐতিহ্য নয়, এটি ইউনেস্কোর শর্ত অনুযায়ী বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের ও যোগ্যতা রাখে।

 

ফেনী নদী 

ফেনী নদী বাংলাদেশের একটি আঞ্চলিক নদী। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৫৯ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক ফেনী নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ১২।  খাগড়াছড়ি’র পার্বত্য মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ির মধ্যবর্তী “ভগবান” টিলা থেকে ছড়া নেমে আসে ভাটির দিকে। আর আসালং-তাইন্দং দ্বীপ থেকে রূপ নেয় ফেনী নদী নামে। ভগবানটিলার পর আসালং তাইন্দং এসে প্রাকৃতিকভাবে প্রবাহিত ছড়াকে কেটে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে।

 

গুমানি নদী 

গুমানি নদী বাংলাদেশের উত্তর অংশে প্রবাহিত একটি নদী। এই নদীর দৈর্ঘ্য ২৫ কিলোমিটার, প্রস্থ ৬৫ মিটার, গভীরতা ৫ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন ১০০ বর্গকিলোমিটার। এই নদীর প্রবাহের ধরন মৌসুমি প্রকৃতির। কম প্রবাহের মাস মার্চ। তবে উৎসমুখ রেগুলেটর দ্বারা বন্ধ হয়ে আছে বলে প্রবাহ থাকে না। আগস্টে বেশি প্রবাহ থাকে। তখন পানির গভীরতা হয় ৫ মিটার। মার্চে পানির গভীরতা এক মিটারে কমে আসে। জোয়ার-ভাটার প্রভাব নেই এই নদীতে। গুমানি নদী আত্রাই নদীর একটি শাখা নদী। গুমাণী কাছিকাটা থেকে উৎপন্ন হয়ে সোনাহারা এসে বড়াল নামধারণ করে হুরাসাগরে পতিত হয়েছে।

 

 

 

তথ্যসূত্র: https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%B0_%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE